গদ্দীনশীন হুযুর কেবলা (রঃ)র পাক জুবানের নূরানী বয়ান september 2017

💬 : 0 comment
গদ্দীনশীন হুযুর কেবলা (রঃ)র পাক জুবানের নূরানী বয়ান

    সুরা ফাতিহা ৭ আয়াত বিশিষ্ট মহা কুরআন। একবার পড়লে ২০ পারা কুরআন শরীফের যিল্লী সওয়াব পাওয়া যায়। আর আমল করলে সমস্ত কুরআন শরীফের নুর আল্লাহ তার মধ্যে দিয়ে দেবেন। হাদীস; আল্লাহ বলেন, হে নবী (সাঃ)! কুরআন পাকের সহজ সহজ  জিনিস পাঠ কর বা আমল কর। সুরা এখলাস একবার পড়লে ১০ পারা কুরআন শরীফের সওয়াব। ফালাক যে পড়বে জাদু-টোনা, জিন ও ভূতের আসর ও কুট ষড়যন্ত্র থেকে আল্লাহ তাকে বাঁচাবেন। সুরা নাস যতদিন আমল করবে শয়তান তাকে কোন ক্ষতি করতে পারবে না। শয়তান এলেও মৃগী রোগীর মত ছটফট করবে। নবী (সাঃ) নূরের হিদায়াতের প্রদীপ। সারা পৃথিবীর মানুষকে রাস্তা দেখিয়েছেন। আখেরী যামানায় কোন নবী আসবে না। নবীর কাজ করবেন কামিলগণ।
    পৃথিবীতে ৩০০ দরূদ শরীফ আছে। হাক্কানী দরূদ শরীফ পড়লে ৩০০ দরূদের সওয়াব পাওযা যাবে। এই হাক্কানী দরূদ শরীফের মধ্যে এটা রূহানী ফয়ে ও আল্লাহর রসুল (সাঃ) ও তিন মুরশিদ কেবলা (রহঃ) এর ফয়েয আছে। এটা কবুলিয়াত ও মকবুলিয়াত করা। আল্লাহ এবং তার কোটি কোটি ফেরেস্তা নবী (সাঃ) র উপর দরূদ পড়ছেন। যদি কেউ দরূদ পড়ে, পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নবী (সাঃ) এর মাযারে চলে যায় এবং মাযারে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নবী (সাঃ) তার জবাব দেন। পাক কালেমা যায় আর কোটি কোটি নিয়ামত নিয়ে ফিরে আসে। বিদ্যুতের শক্তি অপেক্ষা দ্রুততর গতিতে এই দরূদ শরীফ যায়। বিপদে পড়ে গেছ হাক্কানী দরূদ শরীফ পড় বিপদমুক্ত হয়ে যাবে। হাক্কানী দরূদ শরীফ পড়লে ৫টা নিয়ামত পাওয়া যায়। গোনাহ মাফ হয়, পেরেশানী দূর হয়, খাস রহমত দান করেন, সম্মান বৃদ্ধি, দুনিয়াতে কবরে হাশরে সব জায়াগায় সকল রকম পেরেশানী মেটাবে। এই দরূদ শরীফ পড়লে ৩০০ রকমের ফয়েজ পাওয়া যায়। দোওয়ার সহিত দরূদ শরীফ যোগ না থাকলে সেই দোওয়া কবুল হবে না। নবী (সাঃ) র উপর দরূদ যে না পড়ল, সে যেন মরা গাধার পেটহতে বের হলো । আল্লাহ বলেন, আমার নবী (সাঃ)র উপর যে দরূদ শরীফ পড়বে তার যত কুফরী গোনাহ থাকবে আল্লাহ তা দুর করে দেবেন এবং দ্বীলকে শানিত করে দেবেন। আমরা কোটি কোটি মানুষ আমাদের প্রত্যেকের বিবেক শক্তি আলাদা। একীন ও বিশ্বাসের সহিত নামায পড়তে হবে। একীন, বিশ্বাস বিভিন্ন রকম। নামায কারো কবুল হচ্ছে কারো আংশিক কবুল হচ্ছে। নবী (সাঃ) র সমস্ত যিন্দেগী তাঁর উম্মতের জন্য। ওলী আল্লাহগণ আমাদের জন্য কেঁদে আকুল। কেমন করে আমরা আলা দরযা পাবো। নামায কবুল না হলে তার সব বেকার। নামায ঠিক মত না হলে দরূদ শরীফ পড়লে নবী (সাঃ) সুপারিশ করে তা কবুল করিয়ে দেবেন। দরূদ শরীফ পড়বার সাথে সাথে আল্লাহর গায়েবী মদদ এসে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে কাজ হয়। যে কোন কাজ শুরু করার আগে দরূদ শরীফ পড়লে তাতে বরকত হবে এবং আল্লাহ সেই কাজ করে দেবেন।  দরূদ পড়ে বিসমিল্লাহ বলে দাও তোমার কাজ হয়ে যাবে। যার যেমন দ্বীলের টান সে তেমন ফায়দা পাবে। যে যত পানিতে নামবে তার ততটা ভিজবে। সকল নবীগণের সর্দার হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম। দরূদ তাজ পড়ে যে কাজে যাবে তা সফল হবে। সেই কাজে বরকত হবে। ফজরে অন্তত একবার দরূদ তাজ পড়বে। হযরত মুহম্মাদ (সাঃ) শেষ নবী। তাঁর পর আর কোন নবী আসবে না। নবী (সাঃ) এর ৯৯টা দরজা আল্লাহপাক দিয়েছেন। মুরশিদ কেবলা (রহঃ) এর দরবারে অনেক খরচ করে এসেছে ন। সমস্ত খরচ আল্লাহ জিহাদে গণ্য করে নেবেন। 
    আমরা মরে যাব। হাক্কানী আঞ্জুমান হতে যত উরসেকুল ও অনুষ্ঠান হবে তার সওয়াব তুমি কবরে শুয়ে শুয়ে পাবে। হাক্কানী ওজীফা কাউকে শিখিয়ে দিলে সে আমল করলে তার সওয়াব তুমি কবরে শুয়ে শুয়ে পাবে। মরে যাবার সময় কোন মানুষ যদি ওসিয়াত করে যায়, বাবা! নামায পড়বে ওযীফা পড়বে মজলিসে যাবে, তাহলে ঐ ব্যক্তি কবরে শুয়ে শুয়ে নেকী পাবে। আমলের দ্বারা কোটি কোটি নেকী। গাধা কোটি কোটি কিতাব বহন করে কিন্তু কোন আলিফের জ্ঞান নাই। যাহেরী আলিমের ঐ রকম ইলম আছে কিন্তু ইলমের কোন আমল নাই। সুফী আজানগাছী (রহঃ) আমাদের মুরশিদ সকল ইলমকে আমলে পরিণত করে দিলেন। নবী (সাঃ) ইলমকে আমলে পরিণত করার দ্বারা একজন আনপড় লোককে যেমন সাহাবী তৈরী করেছিলেন। মুরশিদ কেবলা (রহঃ) সেই রকম ইলমকে আমল করিয়ে দিলেন। কিয়ামত পর্যন্ত সালানা উরসেকুল জারীথাকবে। পাহাড় টলবে, কিন্তু তিন মুরশিদ কেবলা (রহঃ) এর কথা নড়বে না। অনেক বাধা আসবে কিন্তু কোন বাধা সালানা উরসেকুল বন্ধ করতে পারবে না। আল্লাহর সহিত যুক্ত এই সালানা উরসেকুল। আল্লাহ হায়্যুম কায়্যুম। আর হায়্যুন কায়ামের সহিত যার সসম্পর্ক সেও হায়্যুন কায়্যুম। যারা এখনও জন্মগ্রহণ করেননি মুরশিদ কেবলা তাদের জন্যও দোওয়া করছেন।
    নবী (সাঃ) বলেন, আমরা তো জিহাদ করে এলাম সওয়াব পেলাম কিন্তু এমন অনেক লোক আছে জিহাদে যায় নাই। অথচ জিহাদের সওয়াব পেয়েছে। এরা ছিল মাযূর ও শিশু। এদের নিয়েত ছিল জিহাদে যাওয়ার। নিয়েতের জন্যে জিহাদে না গিয়েও জিহাদের পুরো সওয়াবটা ভুলে নিল। জিহাদের নেকী তোমার নেকীর সহিত যুক্ত হলে তুমি হককুল মুমিন বা খাঁটি মুমিন নাবিয়্যীন, সিদ্দীকীন হয়ে গেলে। অনেক লোক নবী (সাঃ) এর কাছে এলো। যারা অভাবী, মায়ূর, অন্ধ, কানা, খোঁড়া তাদের জন্য জিহাদ মাফ। কিন্তু এমন অনেকে এলো তারা সুস্থ সবল। তারা বলল, হে নবী (সাঃ)! আমরা জিহাদে যাব আমাদের জিহাদে ঘোড়া দিন, অস্ত্র দিন। নবী (সাঃ) জিহাদে যাওয়ার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ঘোড়া ও অস্ত্র দিতে পারলেন না। তারা চোখে পানি ফেলতে ফেলতে ঘরে ফিরে এলো। আল্লাহ বললেন, হে নবী (সাঃ)! যারা চোখের পানি ফেলতে ফেলতে ঘরে ফিরে এসেছে, তারাও জিহাদের সওয়াব পাবে। সালানা উরসেকুল জিহাদের ময়দান। এখানে কর্মীরা কাজ করছেন আর নামাজ পড়ছেন। অনেক মানুষ চিঠি লিখলেন আর বললেন, আমরা অসুবিধার জন্য জিহাদে যেতে পারলাম না। চোখের পানি ফেলতে লাগল। এরাও জিহাদের সওয়াব পেলো। যারা পরিশ্রম করছে তারা মুহাজিরীন ও আনসার বাহিনী। নবী (সাঃ) এর সময়ে এই আনসার বাহিনী ছিল। এই দরবারে কোন একটি জিনিস এখান থেকে ওখানে সরিয়ে রাখলে তাতেও সওয়াব। আল্লাহর ভয়ে যদি চোখ দিয়ে একবিন্দু পানি পড়ে ও আল্লাহর কাজ করতে করতে এক ফোঁটা রক্ত বের হয়, তাও জিহাদে গণ্য হবে। সুফী আজানগাছী (রহঃ) এর ওসীলায় আমাদের বাপ-মা, আত্মীয় স্বজন জান্নাতী হয়ে গেলেন। এই দরবার না পেলে আমরা ৭২ ফেরকার দলে চলে যেতাম। সুফী আজানগাছী (রহঃ) র এই দরবার কায়েম করার জন্য আমরা তাঁর কাছে ঋণী। আমরা মুরশিদ কেবলা (রহঃ) র এই ঋণ শোধ করতে পারব না। হে আল্লাহ! কিয়ামত পর্যন্ত এই সালানা উরসেকুল জারী রেখে দাও । কিয়ামত হঠাৎ হবে, মৃত্যুও হঠাৎ হবে। কিয়ামত পর্যন্ত যারা আসবে ফয়েয বরকত পাবে। আমরা মরে যাব, , কিয়ামত পর্যন্ত আমরা থাকতে পারব না। কিন্তু নিয়েতের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত যত উরস হবে তার নেকী পাওয়া যাবে। মুমিনের কার্য অপেক্ষা নিয়েত শ্রেষ্ঠ। যেখানে শাখা মজলিস হবে তার মধ্যেও শরীক করে নিবে। ওলীদের যত কাজ আল্লাহর আরশকে কেন্দ্র করে। তৃতীয় মুরশিদ সূফী আফিসী কেবলা (রহঃ) বলেছেন, যারা মুরশিদ কেবলা (রহ) এর এই নিয়ামত পেয়েছে তাদের নসীব বোলন্দ। ওয়ায়েযীন দ্বারা সারাবিশ্বে আল্লাহর নূর ছড়িয়ে পড়ছে । নবী (সাঃ) এই রকমভাবে প্রচার করেছেন। যেখানে যেতে পারেননি চিঠি লিখে সেখানে আল্লাহর নূর ছড়িয়ে দিয়েছেন। সুফীর দরবার। মুরশিদ কেবলা (রহঃ) র দরবার যেন সমুদ্র। বিভিন্ন তরীকার লোক এই সমুদ্রে এসে মিলিত হলো ।
    উরসেকুলের নিয়ম : টাকাতে সন্দেহ হলে বিনা তাবারকে উরসেকুল করবেন। পুরোপুরি ফয়ে বরকত পেয়ে যাবেন। নিয়েতে নেকী। তোমার টাকা নাই খারাপ টাকাতে উরসেকুল করলে তুমি একটি হুকুমকে অমান্য করলে। উরসেকুল সবাই করতে পারে। তবে মুরশিদ কেবলা (রহঃ) র হুকুম মত করতে হবে। আগের যামানায় একবার বিরাট দুর্ভিক্ষ হলো। অনেক লোক মারা গেল। একজন গরীব মানুষ তার দান করার কোন ক্ষমতা নাই। তিনি নিয়েত করলেন, হে আল্লাহ! ঐ বালির পাহাড়টা যদি সম্পদ হয়ে যেতো এই দুর্ভিক্ষে আমি তা দান করতাম। এই নিয়েতের জন্য আল্লাহ তার আবেদনকে কবুল করেছেন। সেই যুগের কোন এক ওলীকে আল্লাহপাক জানিয়ে দিলেন অমুক লোক নিয়েত করেছিল যে, বালির পাহাড়টা সম্পদ হলে আমি দুর্ভিক্ষে দান করতাম। আমি আল্লাহ তার আবেদন কবুল করেছি। বালির পাহাড়টা সম্পদ হয়নি বটে, তবে সম্পদ দান করার মত সওয়াব ঐ ব্যক্তি পেয়েছেন। নিয়েতের মূল্য এমনি। আমরা কিছু করতে পারি বা না পারি শুধুমাত্র নিয়েত দরকার। নিয়েত করে সেই কাজ করতে না পারলে সেই কাজের সওয়াব আল্লাহ দেবেন। লাখ টাকা খরচ করে উরসেকুল করলে যে সওয়াব, বিনা খরচে উরসেকুল করলে সেই একই সওয়াব। মুরশিদ কেবলা (রহঃ) এর হুকুমের বাইরে গেলে কোন ফল হবে না। যে উরসেকুল করবে, সে যেমন সওয়াব পাবে, যারা উরসেকুলে শরীক হবে তারাও সেই রকম সওয়াব পাবে।