হাক্কানী
আঞ্জুমান প্রতিষ্ঠান
পৃথিবীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সৃষ্টির সেরা জীব অর্থাৎ মানুষ জাতির মধ্যে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে আছে। একটি হল হিজবুল্লাহ( আল্লহর অনুসারী) এবং হিজবুশ শায়তান (শয়তানের আনুসরনকারী)। কিন্তু শেষ নবী ও রসূল হজরত মোহাম্মাদ মোস্তফা (সা্ঃ) এর উম্মতের মধ্যে বিভিন্ন ফেরকাতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেখা যায় একদল মাজহাব অনুসরনকারী ও অপরদিকে মাজহাব বিরধী, একদল আলহে সুন্নাত আল জামায়াত পন্থী অপর দিকে সকল হাদীসকে জাল, জাইফ বলে বিবেচিত করে হাদীসপন্থী। একদল তাসাওয়ুফ পন্থী অপরদিকে তাসাওয়ুফ বিরধী। একদল হাক্কানী পীরকে অনুসারনকারী অপরদিকে পীরের নামে ভণ্ডামি করে নিজেরা পীর সেজে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে হাক্কানী পীরকে বদনামকারী। এইসব ফেরকাবাজী থেকে মুক্ত রসূল (সা্ঃ) এর সুন্নাত (হাদীস) এর উপর আমলকারী এবং পৃথিবীর শুরু থেকে আজও পর্যন্ত যত গুলো আল্লহর মেহবুব বান্দা এবং রসূল (সা্ঃ) এর অনুসারনকারী সাহাবীগণ তাবেয়ী, তাবে- তাবেয়ী এবং শরিয়তের ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম হাম্বাল (রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি) এছাড়াও তরিকতের ইমাম বাহাউদ্দি্ন নকশাবন্দ (নকশাবন্দী তরীকা), মোজাদ্দেদ আল-ফে-সানি (মোজাদ্দেদিয়া), খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (চিশতিয়া), আব্দুল কাদির জিলানী (কাদেরিয়া), হাজী এমদাদুল্লাহ মোহাজেরে মাক্কী (রহ্মাতুল্লাহি
আলাইহি) (এমদাদিয়া) তরিকার অনুসরণকারী হজরত মাওলানা সূফী মূফতী আজানগাছী (রহঃ) এর প্রতিষ্ঠিত “হাক্কানী আঞ্জুমান” দরবার বর্তমানে যা আজ পৃথিবীব্যাপী প্রচারিত।
হাক্কানী আঞ্জুমান শব্দের অর্থ- হাক্কানী শব্দের উৎপত্তি “হক্ব” থেকে, হক্ব শব্দের অর্থ- সত্য, যারা সত্যকে অনুসরণ অনুকরন করে চলে তাদেরকে হাক্কানী বলে। এবং আঞ্জুমান শব্দের অর্থ- সংগঠন। অর্থাৎ হাক্কানী আঞ্জুমান শব্দের অর্থ- সত্যের সংগঠন। যেহেতু- বর্তমান যুগের সমস্ত ফিতনা থেকে মুক্ত। আহলে সুন্নাত আল জামায়াতের অনুসারনকারী ও সমস্ত হক্ব
তরীকাকে একত্রকারী সংগঠন, সেহেতু
হজরত মাওলানা সূফী মূফতী আজানগাছী (রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি) তাঁর এই সংগঠনের নাম ‘হাক্কানী আঞ্জুমান’ রেখেছেন।
হজরত মাওলানা সূফী মুফতী আজানগাছী (রহ্মাতুল্লাহি
আলাইহি) মাত্র ২৫ বছর বয়সে নিজগৃহ ত্যাগ করে নির্জনে গিয়ে সাধনা শুরু করেন। অতঃপর
১৪ বছর অতিক্রম করার পরে আল্লাহর হুকুম এবং খিজির(আলাইহিস সালাম) এর সাক্ষাৎ লাভ
করে তিনি নিজেকে আত্মপ্রকাশ করে এবং আল্লাহ দ্বীন লোক সমাজে প্রচার করতে শুরু
করেন। প্রথম দিকে তিনি নিজের গ্রামে অর্থাৎ আজানগাছী গ্রামে একটি তালপাতার ছোট্ট
কুঁড়ে ঘর তৈরি করে সেখানে প্রচারের কাজ শুরু করেন। কিন্তু গ্রামের লোকের অত্যাচার
এবং সর্বশেষে তার হুজরা মোবারক পুড়িয়ে দেওয়ার কারনে তিনি ব্যাথিত হয়ে গ্রাম ত্যাগ
করে কলকাতায় চলে আসেন। কলকাতায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন এবং মির্জাপুর ষ্ট্রীটস্থ চুলিয়ার
মসজিদে ওয়াজ- নসিহত করে লোকেদের আল্লাহর পথে আহব্বান করতে থাকেন। এছাড়াও বিভিন্ন
জায়গায় গিয়ে লোকেদেরকে আল্লাহর পথে আহব্বান করতে থাকেন। সুদ হারাম এ কথা শুনে
সুদের ব্যাবসায়ী কাবলিওয়ালারা প্রবল বাধা এবং শারীরিক ভাবে অত্যাচার করতে থাকেন, ফলে
তিনি ওখানে থেকে চলে আসেন শিয়ালদাহ অঞ্চলে। এসময়ে তিনি মানিকতলার ১৮নং বাগমারীতে
কিছু জমি কিনে সেখানে একটি হুজরা তৈরি করে তার নাম দেন ‘ফকিরী হুজরা মোবারক’। এখানে
সপ্তাহিক এবং মাসিক কুরআন ক্লাসের মজলিশ চালু করেন। তিনি ১৮৭৬ সালে মৌখিক ভাবে ‘হাক্কানী
আঞ্জুমান’ সংগঠন তৈরি করেন পরবর্তীতে ১৯১৬
সালে সরকারী ভাবে লিল্লাহ ওয়াকাফ রেজিস্ট্রি করেন। যেটি এখনও
পর্যন্ত চালু আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত চালু
থাকবে। ইনশাআল্লাহ্
বর্তমানে “হাক্কানী আঞ্জুমান” দরবার আন্তর্জাতিক একটি সুপরিচিত মাজহাবী, সমাজী, ফালাহী ও রুহানী প্রতিষ্ঠান। “বিনা পয়সাই দ্বীন দুনিয়ায় শান্তি ও মঙ্গল”।
0 Post a Comment:
Post a Comment