হজরত হরম ইবনে হাব্বান। Hajrat Haram ibn Habban

 হজরত হরম ইবনে হাব্বান (রা)  

হজরত হরম ইবনে হাব্বান (র) তরিকতের বুযুর্গদের মধ্যে পবিত্রতার ভাণ্ডার হিসেবে পরিগণিত । তিনি সাহাবা কেরামের সাক্ষাত পেয়েছেন এবং হজরত ওয়ায়েস করনি (র) এর দর্শন পেয়েছেন। তিনি হজরত ওয়ায়েসের সাথে দেখা করার জন্য প্রথমে করন যান।

সেখানে পৌঁছার পর জানতে পারলেন যে তিনি কূফার দিকে চলে গেছেন। তিনি কূফা যান এবং সেখানেও তাঁর কোন সন্ধান পান নি ।  

তিনি তাঁকে সন্ধান করার জন্য বেশ কিছুদিন কুফায় অবস্থান করেন । বহুদিন সন্ধান করার পরও যখন পেলেন না তখন হজরত হরম হতাশ হয়ে বসরার দিকে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে হঠাৎ তিনি দেখতে পেলেন হজরত ওয়ায়েস গুদরী পরিহিত অবস্থায় ফোরাত নদীতে উজু করছেন। উজু শেষ করার পর তিনি তার দাড়ি মোবারক চিরুনী দিয়ে আচড়াতে শুরু করলেন । হজরত হরম ইবনে হাব্বান সালাম করলেন ।  

হজরত ওয়ায়েস বললেন: ওহে হরম ইবনে হাব্বান ওয়ালাইকুমুস  

সালাম ।  

হজরত হরম আশ্চর্য হয়ে বললেন, হজরত! আপনি কীভাবে জানতে পারলেন যে, আমি হরম ইবনে হাব্বান?  

তিনি বললেন: আমার আত্মা তোমার আত্মাকে চিনতে পেরেছে। হজরত হরম (র) বলেন, হজরত ওয়ায়েস (র) হজরত ওমর ও আলী (রা) এর সাথে যতক্ষণ কথা বলেন তার অপেক্ষা বেশি সময় আমার সাথে কথাবার্তা বলেন । তাঁদের বর্ণিত হাদীস “কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল” –সম্পর্কেও আমার সাথে বিস্তর আলোচনা করেন। তারপর বললেন: তোমার অন্তরে তুমি যা কিছু পোষণ কর সেমতে তোমাকে আখেরাতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ।  

তাই তোমার অন্তরকে স্বচ্ছ রাখ, এক আল্লাহর প্রতি তোমার অন্তরকে নিয়োগ করে তারই সন্তুষ্টি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা রাখ। প্রতিটি কাজে নিয়ত পরিশুদ্ধ রাখ। এটাই তোমাকে শয়তানের প্ররোচনা হতে রক্ষা করতে সক্ষম হবে। কারণ অন্তর ও নিয়ত যাঁদের বিশুদ্ধ অভিশপ্ত শয়তান প্রথম দিনই  

তাঁদের উপর সফলকাম না হওয়ার ঘোষণা করে বলেছে।

.  

“আদম সন্তানদের মধ্যে অকপট বান্দা ছাড়া আমি সকলের সাথেই প্রতারণা করব।” (সূরা: আল-হিজর- ৩৯-৪০)  

এখানে শব্দের লামের ওপর যবর কিংবা লামের নিচে যের দিয়ে পড়লে উভয়বিধ তেলাওয়াতই বিশুদ্ধ । যখন লামের ওপর যবর দিয়ে পাঠ করা হয় তখন তার অর্থ হয়, যারা কঠোরভাবে রিয়াজাত মুজাহাদা করে অন্তরকে আল্লাহগত করে । আর যখন যের দিয়ে পড়া হয়; তখন তার অর্থ হয়- যা হৃদয় অকপটতা বা অকৃত্রিমের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে এবং তাঁরা দেহ ও আত্মার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে।  

অতএব প্রথম নিয়মের স্তর হলো রিয়াজাত মুজাহাদা এবং কঠোর সাধন ভজনের স্তর । আর দ্বিতীয় স্তর হলো কঠোর সাধন ভজনের পর যারা আল্লাহর কাছে সম্মানিত জন হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন ।  

হজরত হরম (রহ) বলেন: “তোমার অন্তরে যা কিছু রয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতেই তোমার হিসাব কিতাব নেওয়া হবে” –এই উপদেশ দান করার পর আমার কাছ থেকে বিদায় গ্রহণ করে পরকালের যাত্রার জন্য তৈরি  

হতে লাগলেন ।



0 Post a Comment:

Post a Comment