তরিকতের ইমাম হজরত আলী রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। hojrot ali imam of tarikot

   হজরত আলী رَضِيَ اللهُ عَنْهُ একজন বীর যোদ্ধা যিনি যুদ্ধ কালে ৯০০ কেজি ওজনের একটি দরজা নিয়ে ঢাল হিসাবে ব্যাবহার করে যুদ্ধ করেছে। হজরত আলী ইবনে আবু তালিব অর্থাৎ পায়গম্বার সা্ঃ এর নিজের চাচা। পায়গম্বার সা্ঃ যার কাছে ছোটো বেলা থেকেই লালিত পালিত হয়েছেন।

এই মহান বীর যোদ্ধা ১৩ ই সেপ্টেম্বর ৬০০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম আবু তালিব এবং মায়ের নাম ফাতেমা। তথ্য সুত্রে থেকে জানা যায় তিনি জন্মের ঠিক তিন দিন আগে তার মা অর্থাৎ ফাতেমা খানায় কাবা(তৎকালীন মূর্তি রাখা হত) প্রসাব বেদনা লাঘব করার জন্য কাবা শরীফের মধ্যে যায় এবং সেখানেই হজরত আলী রা্ঃ জন্মগ্রহণ করেন। স্বয়ং পায়গম্বার সা্ঃ তার নাম করন করেন আলী ( যার অর্থ মহান)।

  হজরত পায়গম্বার সা্ঃ তার পিতা এবং মাতা অফাত গ্রহনের পরবর্তীতে তিনি তার দাদা অর্থাৎ আব্দুল মুত্তালিব এর কাছে লালিত পালিত হয়। এবং তিনি মারা যাওয়ার পরে তার সব ছেলের মধ্যে থেকে আবু তালিবকে ঠিক করেন হজরত পায়গম্বার সা্ঃ কে লালিত পালিত করার জন্য। কিন্তু তার দরিদ্রতার কবলে পড়েন। ফলস্বারুপ তার পুত্র আলী রা্ঃ কে পায়গম্বার সা্ঃ নিজ গৃহে নিয়ে হজরত খাদিজা এবং পায়গম্বার সা্ঃ লালন পালন করেন। প্রাথমিক শিক্ষা তিনি পায়গম্বার সা্ঃ এর কাছে থেকে নেন। এবং পায়গম্বার সা্ঃ যখন রিসালাতের দাওয়াত দেন তার বয়স ১১ বছর, সেই সময়ে তিনি ইলসাম ধর্ম গ্রহন করেন।  

   মদিনায় হিজরতের দ্বিতীয় বছরে মুহাম্মাদ সা্ঃ তার কন্যা ফাতিমার জন্য বহু বৈবাহিক প্রস্তাব পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আল্লাহর আদেশে তাকে আলীর সাথে বিবাহের সিদ্ধান্ত নেন। বদরের যুদ্ধের বেশ কয়েকদিন আগে তার সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। তবে তিন মাস পরে এই বিবাহ উদযাপিত হয়েছিল। হজরত আলীর রা্ঃ বয়স তখন প্রায় ২৩ বছর এবং হজরত ফাতেমা রা্ঃ বয়স ১৮ বছর। এটি সময়ের সবচেয়ে আনন্দময় এবং উদযাপিত বিবাহ ছিল। তারা ছিলেন আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট দম্পতি। তাদের দুই পুত্র সন্তানের নাম যথাক্রমে হাসান রা্ঃ এবং হুসাইন রা্ঃএছাড়াও হজরত ফাতেমা রা্ঃ এর গর্ভে আর দুই জন কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করেন তাদের ভিন্ন ভিন্ন নাম পাওয়া যায় একজনের নাম জয়নাব এবং অপর জনের নাম উম্মে কুলসুম রা্ঃ। হজরত ফাতেমা রা্ঃ ওফাত গ্রহনের পরবর্তীতে তিনি আরো ৮ টি বিবাহ করে।

হযরত আলী (রাঃ)-এর সাহস ও সাহসিকতা ছিল অনন্য ও অতুলনীয় এবং তাঁর অনন্য গুণাবলীর মধ্যে একটি হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর সাহসিকতার কারণে হযরত আলী (রাঃ)-কে  "আসাদুল্লাহ"  অর্থাৎ  "আল্লাহর সিংহ" নামে ডাকা হত । পায়গম্বার সা্ঃ হজরত আলী রা্ঃ এর জ্ঞান সম্পর্কে বলেন, “আনা মাদিনাতুল ইল্ম ওয়া আলিয়ুন বাবুহা”। আমি জ্ঞানের শহর এবং আলী রা্ঃ তার দরজা। ইসলামের জন্য তার ত্যাগ অপরিসীম। মদিনায় হিজরত কালে, যখন কাফের গন পায়গম্বার সা্ঃ এর হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল সেই রাতে পায়গম্বার সা্ঃ এর জায়গায় স্বয়ং হজরত আলী রা্ঃ নিজের শয়ন করেছিলেন। এই কাজের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা ফেরেস্তাদের নিকট গর্ভ করেছিলেন।

হজরত জুনায়েদ বাগদাদী রা্ঃ বলেন, বিপদে ধৈর্য ধারনে এবং ইলমে তরিকতে হজরত আলী রা্ঃ আমাদের নেতা। কোন এক ব্যাক্তি হজরত জুনায়েদ বাগদাদী রা্ঃ এর নিকট কিছু উপদেশ চাইলে তিনি বলেন, হজরত আলী রা্ঃ বলেন, তোমার পরিবার পরিজনের প্রতিই যেন তুমি সর্বদা লিপ্ত না থাক। মনে রেখ তোমার পরিবারের লোক যদি আল্লহর বন্ধু হয় তাহলে আল্লাহ তাদের কখনো কষ্ট দিবেন না। আর যদি তারা শত্রু হয় তবে তোমার সাথে তোমার সম্পর্ক কি?

 


 

0 Post a Comment:

Post a Comment