এর উত্তর ইসলামি জ্ঞান ও ফিকহের আলোকে দেওয়া যায়:
---
📌 সংক্ষেপে উত্তর:
হ্যাঁ, একজন সাধারণ মুসলমানের জন্য মাযহাব মানা প্রয়োজনীয়, কারণ সে নিজে কুরআন-হাদীস থেকে সরাসরি সবকিছু বুঝে শরীয়তের হুকুম নির্ণয় করতে অক্ষম। তবে, অন্ধভাবে মাযহাব মানা (যা কুরআন-হাদীসের সুস্পষ্ট নির্দেশের বিপরীত হয়) সেটা ইসলাম অনুমোদন করে না।
---
🕌 মাযহাব কী?
“মাযহাব” শব্দের অর্থ: মতপথ বা পথচলা। ইসলামে এটি সাধারণত চারটি প্রধান ইমামের প্রতিষ্ঠিত ফিকহি মতবাদ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়:
1. হানাফি (ইমাম আবু হানিফা রহ.)
2. মালিকি (ইমাম মালিক ইবন আনাস রহ.)
3. শাফেয়ি (ইমাম মুহাম্মাদ ইবন ইদরীস শাফেয়ি রহ.)
4. হাম্বলি (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল রহ.)
---
🤔 কেন মাযহাব মানা দরকার?
১. সাধারণ মুসলিম কুরআন-হাদীসের সব বিষয়ে বিশদ জ্ঞান রাখে না। ২. কুরআন-হাদীসে অনেক বিষয় ইজতিহাদ বা বিশ্লেষণের মাধ্যমে বোঝা যায়—যা আলিমগণ করেছেন। ৩. ইমামগণ তাঁদের গভীর জ্ঞান ও তাকওয়ার মাধ্যমে এসব ব্যাখ্যা করেছেন। ৪. এজন্য একজন সাধারণ মুসলমানের উচিত, একজন নির্ভরযোগ্য ইমামের অনুসরণ করা।
---
❌ কী ধরনের মাযহাব-মানা নিষিদ্ধ?
কুরআন ও সহীহ হাদীসের স্পষ্ট নির্দেশের বিরুদ্ধেও মাযহাব মানা।
অন্য মাযহাবকে অবজ্ঞা বা গালমন্দ করা।
নিজের মাযহাবকে “শুধুমাত্র সঠিক” মনে করা ও বাকিদের “ভুল” বলা।
---
✅ ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি:
🔹 ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেছেন:
> “আমার কথা কুরআন-হাদীসের বিরোধী হলে, তা ছুঁড়ে ফেলে দাও।”
🔹 ইমাম মালিক (রহ.) বলেছেন:
> “নবী (ﷺ) ছাড়া সবাইয়ের কথা গ্রহণযোগ্যও হতে পারে, প্রত্যাখ্যানযোগ্যও।”
---
📚 উপসংহার:
আপনি যদি শরীয়তের ব্যাপারে গভীর জ্ঞানী না হন, তাহলে একটি মাযহাব অনুসরণ করাই নিরাপদ ও শরঈভাবে অনুমোদিত।
তবে মাযহাব মানতে গিয়ে যদি সহীহ হাদীসের বিরুদ্ধে যায় এমন কিছু পান, তাহলে তা খোলামেলাভাবে আলিমদের থেকে ব্যাখ্যা নিয়ে বুঝে নিন।
0 Post a Comment:
Post a Comment