তাজিয়া বের করা বা "তাজিয়া বার করা" মহররমের বিশেষ দিনে বিশেষ করে ১০ই মহররম (আশুরা) উপলক্ষে অনেক মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত একটি প্রথা, যা মূলত শোক প্রকাশের উদ্দেশ্যে করা হয় — বিশেষ করে শিয়া মুসলমানদের মধ্যে। তবে সুন্নি মুসলমানদের মধ্যেও কিছু অঞ্চলে এটি দেখা যায়।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে:
শিয়া মতানুসারে:
তাজিয়া একটি স্মারক প্রতীক যা কারবালার শহীদ হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ)-এর স্মরণে বানানো হয়। এটি তাদের কাছে ইমামের প্রতি ভালোবাসা, শোক ও আনুগত্যের প্রকাশ। তাই তারা এটিকে জায়েজ মনে করে।
সুন্নি মতানুসারে:
অধিকাংশ প্রখ্যাত সুন্নি আলেম যেমন ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফি, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল — এ ধরনের প্রথাকে বিদআত বলেছেন, কারণ:
রাসূল (সা.) ও সাহাবারা কারবালার ঘটনার পরও এ ধরনের কোনো আনুষ্ঠানিক শোক পালন করেননি।
ইসলামে শোক পালন তিন দিনের বেশি জায়েজ নয়, শুধুমাত্র স্ত্রী তার স্বামীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করে।
বাংলাদেশ/ভারত/পাকিস্তানে প্রচলিত রূপে তাজিয়া:
গান-বাজনা, ঢোল-তবলা, পায়ে হেঁটে মিছিল, আত্মপ্রহার (জান intentionally কষ্ট দেওয়া) — এগুলো ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম বা নাজায়েজ।
কোনো মৃতব্যক্তিকে স্মরণ করা জায়েজ, কিন্তু তাতে বাড়াবাড়ি করা, নতুন রীতি চালু করা বিদআত হিসেবে ধরা হয়।
---
সারাংশ:
🔹 তাজিয়া বের করা ইসলামী শরিয়তের মূল উৎস (কুরআন ও সহীহ হাদীস) অনুযায়ী জায়েজ নয়।<br> 🔹 এটি একটি বিদআতি প্রথা, বিশেষ করে যদি তাতে ঢোল-বাদ্য, মাতম, মিছিল, ও শরীরকে আঘাত করার মতো কাজ জড়িত থাকে।
---
প্রস্তাবনা:
আপনি যদি কারবালার শহীদদের স্মরণ করতে চান, তাহলে দোয়া করুন, রোজা রাখুন, কুরআন তিলাওয়াত করুন, সাদকা দিন — এগুলো শরিয়তসম্মত এবং ইমাম হুসাইন (রাঃ)-এর প্রকৃত আদর্শ অনুসরণের উপায়।
0 Post a Comment:
Post a Comment